Breaking News

হার মেনে যাচ্ছে শীতের পোশাক

যশোরে তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তবে দেরিতে হলেও রোদের দেখা মিলছে। সকাল থেকে ঘন কুয়াশা হলেও সাড়ে দশটার দিকে কিছুটা রোদ বেরিয়েছে। তারপরও হার মেনে যাচ্ছে শীতের পোশাক! হাড় কাঁপানো শীতে হার মেনে যাচ্ছে শীতের পোশাক।

একটু গরম তাপের পরশ পেতে আগুনই যেন শেষ ভরসা। রোববার (৮ জানুয়ারি) সকালে যশোর শহরের মনিহার এলাকায় সড়কের পাশে টায়ার, কাগজ, কাঠ জ্বালিয়ে দলবেঁধে ৮-১০ জনকে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।

গত চার দিনের তীব্র শীতে নাজেহাল হয়ে পড়েছে এ জেলার জনজীবন।যশোর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের সার্জেন্ট আশা জানান, রোববার যশোরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

থেকে থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। মনিহার মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে আগুনের তাপ নিতে থাকা পরিবহন শ্রমিক আল-মামুন জানান, গত চার দিন ধরে একই রকম ঠান্ডা। মাঝখানে একদিন দুপুরে সূর্যের দেখা মিললেও ওই দিনও যশোরের তাপমাত্রা সবচেয়ে কম ছিল। এমন শীতে গাড়ি চালানো কষ্টসাধ্য।

হাত পা অবস হয়ে আসলে গাড়ির হুইল ঠিকমতো ঘোরানো যায় না। শহরের রিক্সাচালকরা জানান, গত চার দিনে যা আয় হয়েছে তাতে রিকশার ভাড়াও ওঠেনি। এমন ঠান্ডায় রিকশায় কোনো যাত্রী উঠতে চায় না, বাতাস লাগে তাই। আমরা যারা রিকশাচালক তারা অনেকেই শীতের মধ্যে রিকশা চালিয়ে ঠান্ডা-জ্বরে ভুগছি। শহরতলীর এলাকার কৃষক জানান, পরশু দিন রোদ দেখে ভেবেছিলাম আবহাওয়া কেটে গেছে, জমিতে চাষ দেওয়া যাবে।

কিন্তু তাও হলো না। আবহাওয়া যা তাই রয়েছে। আর এমন শীতে কোনো শ্রমিক জমিতে কাদামাটিতে কাজ করতে চায় না। সকাল থেকে শহরে সীমিত লোকের চলাচল লক্ষ্য করা গেছে। শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। তীব্র শীতে কাহিল হয়ে পড়ছে জনজীবন। সেইসাথে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।

আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যশোরে রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েক দিন এ তাপমাত্রা বজায় থাকার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। যশোর বিমান বাহিনীর আবহাওয়া অধিদপ্তর সাংবাদিকদের কাছে দেয়া তথ্য মতে, জানানো হয় এক সপ্তাহ ধরে যশোরের তাপমাত্রা নিম্নমুখী।

আজ তাপমাত্রা আরো নেমে এসেছে। আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুয়াশায় আচ্ছন্ন গোটা এলাকা। দৃষ্টি সীমা মাত্র ১০০ মিটার। এতে দিনে গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। সেই সাথে উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি।

এ অবস্থায় চরম দুর্ভোগে সব শ্রেণির মানুষ।এছাড়া প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে বেড়েছে জ্বর, সর্দি ও কাশির রোগ। বিশেষ করে শিশুরা বেশি ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এ অবস্থায় শিশুদের গরম কাপড়ে রাখা ও গরম খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। যশোর বিমান বাহিনীর আবহাওয়া অধিদপ্তর আরো জানিয়েছে, যশোরে শৈতপ্রবাহ বিরাজ করছে এবং আগামী কয়েক দিন এ ধরনের তাপমাত্রা বিরাজ করতে পারে।

এদিকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির ফলে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাচি-কাশিসহ কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। শীতকালীন রোগবালাই থেকে রক্ষা পেতে গরম পানি পান করাসহ গরম কাপড় ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা আবদুস সামাদ জানান, শীতজনিত রোগে আক্রান্তর সংখ্যা বাড়ছে। শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। রোগীর চাপ থাকলেও হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

Check Also

তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে

বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগ অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *